ইউক্রেনে ভয়াবহ বোমা হামলা রাশিয়ার, অন্তত ১৩ নিহত

রাশিয়ার ভয়াবহ বোমা হামলায় ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়ায় নিহত ১৩, আহত বহু

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর জাপোরিঝিয়ায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ভয়াবহ বিমান হামলায় অন্তত ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

হামলার বিবরণ

বুধবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার টেলিগ্রাম পেইজে পোস্ট করা ভিডিওতে হামলার ভয়াবহতা তুলে ধরেন। ফুটেজে দেখা যায়, রাস্তায় আহত বেসামরিক নাগরিকদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন জরুরি পরিষেবার কর্মীরা। জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে বলেন,

> “শহরে বিমান বোমা হামলার চেয়ে নৃশংস আর কিছু হতে পারে না। বেসামরিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে জেনেও এই হামলা চালানো হয়েছে।”

 

প্রভাব এবং ক্ষয়ক্ষতি

ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় জানিয়েছে, হামলায় আবাসিক ভবন, শিল্প স্থাপনা এবং অন্যান্য অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধ্বংসাবশেষ ট্রাম ও বাসের ওপর পড়ে, যার ভেতরে থাকা যাত্রীরা হতাহত হয়েছেন।

আঞ্চলিক গভর্নর ইভান ফেডোরভ জানান, রাশিয়ার বাহিনী গাইডেড বোমা ব্যবহার করে দুটি আবাসিক ভবনকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়।

রাশিয়ার দাবি এবং পরিস্থিতি

যুদ্ধের সময় রাশিয়া প্রায়ই ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামোতে হামলা চালালেও বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।

যুদ্ধের প্রেক্ষাপট

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। প্রায় তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন, ও জাপোরিঝিয়ার আংশিক অঞ্চল দখল করেছে রুশ বাহিনী।

রাশিয়ার দখলে যাওয়া অঞ্চলগুলোর সম্মিলিত আয়তন ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। যদিও দুই পক্ষই নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক, পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অনুমান মতে, এ পর্যন্ত কয়েক লাখ মানুষ হতাহত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

রাশিয়ার এই আগ্রাসন শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো ইউক্রেনকে অস্ত্র ও মানবিক সহায়তা সরবরাহে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তবে বেসামরিক নাগরিকদের উপর এমন ধারাবাহিক হামলার ফলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো ক্রমাগত উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

এই ভয়াবহ হামলা আরও একবার যুদ্ধের নৃশংসতা এবং ইউক্রেনের মানুষের দুর্দশা সামনে নিয়ে এসেছে।

 

শেয়ার করুন

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *