২০টি হারাম নামের একটি থাকলেই দ্রুত পরিবর্তন করুন

ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এখানে জীবের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সব বিষয়ের সুষ্ঠু সমাধান রয়েছে। মানুষের পরিচয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে তার নাম। ইসলামি নাম রাখা গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোর মধ্যে একটি।

মুসলিমদের ইসলামিক শরিয়তের আইন মেনে শিশুদের নাম রাখা হয়। তবে মাঝে মাঝে নিজের অজান্তে এমন কিছু নাম রাখেন যা নিষিদ্ধ বা হারাম, যা আল্লাহর প্রতি অবমাননা সৃষ্টি করে বা ভুলভাবে আল্লাহর নামে কোনো শব্দ যুক্ত করা হয়।

চলুন ইসলামে নিষিদ্ধ বা হারাম নামগুলো জেনে নেওয়া যাক-

১. আল্লাহর নামের সঙ্গে গোলাম বা আব্দ যোগ করে নাম রাখা

আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে। অনেকে আল্লাহ এ গুণবাচক নাম রাখেন। আবার অনেকে আল্লাহর নামের সঙ্গে গোলাম বা আব্দ (বান্দা) শব্দ যুক্ত করে রাখেন। যেমন- আব্দুল ওজ্জা (ওজ্জার উপাসক), আব্দুশ শামস (সূর্যের উপাসক), আব্দুল কামার (চন্দ্রের উপাসক), আব্দুল মোত্তালিব (মোত্তালিবের দাস), আব্দুল কালাম (কথার দাস), আব্দুল কাবা (কাবাগৃহের দাস), আব্দুন নবি (নবীর দাস), গোলাম রসূল (রসুলের দাস), গোলাম নবী (নবীর দাস), আব্দুস শামছ (সূর্যের দাস), আব্দুল কামার (চন্দ্রের দাস), আব্দুল আলী (আলীর দাস), আব্দুল হুসাইন (হোসাইনের দাস), আব্দুল আমির (গভর্নরের দাস), গোলাম মুহাম্মদ (মুহাম্মদের দাস), গোলাম আবদুল কাদের (আবদুল কাদেরের দাস) গোলাম মহিউদ্দীন (মহিউদ্দীন এর দাস) ইত্যাদি।

গোলাম বা আব্দ শব্দগুলো যুক্ত করার পর নামের অর্থই পরিবর্তন হয়ে যায়; যা ইসলামি মূল্যবোধের বিরোধী। যেমন- আমাদের দেশে আব্দুর রহমানকে ডাকা হয় রহমান বলে। আব্দুর রহিমকে ডাকা হয় রহিম বলে। এটি অনুচিত। আর যদি দ্বৈত শব্দে গঠিত নাম ডাকা ভাষাভাষীদের কাছে কঠিন লাগে সেক্ষেত্রে অন্য নাম রাখাই ভালো। এমনকি অনেক সময় আল্লাহর নামকে বিকৃত করে ডাকার প্রবণতাও দেখা যায়। এ বিকৃতির উদ্দেশ্য যদি হয় আল্লাহকে হেয় করা তাহলে ব্যক্তির ইমান থাকবে না।

২. যেসব নাম আল্লাহর নাম নয়

এমন কিছু নাম যা আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নাম মধ্যে নেই তবে মানুষ ভুল করে ভাবে এসব আল্লাহর নাম। যেমন-‘আব্দুল মাবুদ’ বা ‘আব্দুল মাওজুদ’। এগুলি কোরআন বা হাদিসে আল্লাহর নাম হিসেবে আসেনি। তাই, এগুলোর সঙ্গে আব্দ শব্দ যুক্ত করে নাম রাখা হারাম বা নিষিদ্ধ।

৩. অসত্য বা অপ্রাসঙ্গিক নাম রাখা

শিশুদের এমন নাম রাখা উচিত যা মানবজাতির কাছে সঠিক অর্থবহ করবে। একইসঙ্গে এবং ব্যক্তির সাথে সংগতিপূর্ণ হয়। যেমন-‘শাহেনশাহ’,‘মালিকুল মুলক’ (রাজাধিরাজ) নাম রাখা বা ‘সাইয়্যেদুন নাস’ (মানবজাতির নেতা) নাম রাখা হারাম। এ ধরনের নাম অহংকার ও মিথ্যাচার প্রদর্শন করে। তাই এসব নাম রাখা নিষিদ্ধ।

৪. আল্লাহর জন্য নির্ধারিত নামের ব্যবহার

আল্লাহর জন্য নির্ধারিত বিশেষ কিছু নাম, যেমন-আল্লাহ, আর-রহমান, আল-হাকাম, আল-খালেক, এই ধরনের নাম মানুষ বা জীবের জন্য ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।

যাদের নামের মধ্যে উপরের কোনো নিষিদ্ধ বা হারাম নাম রয়েছে তাদের উচিত নামগুলো পরিবর্তন করে রাখা। ইসলামে নামের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। সবার উচিত ইসলামি শরিয়ত মেনে শিশুদের নাম রাখা।

শেয়ার করুন

Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *