সুরের লকারের রহস্য উন্মোচনের জন্য দুদকের অভিযান

বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের ৭ সদস্যের দল। সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুরের ব্যক্তিগত লকার খুলতে এসেছে তারা। ইতোমধ্যে লকারের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে মিটিং সম্পন্ন হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে খোলা হবে এসকে সুরের গোপন লকার।

সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকাল ১১টার দি‌কে বাংলা‌দেশ ব্যাংকে আসে দুদক টিম। প‌রে দুই প‌ক্ষের আলোচনা শেষে স্বর্ণকারকে খবর দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। স্বর্ণকার এলেই লকার খোলার কাজ শুরু হবে।
লকার খোলার সময় উপস্থিত থাকার জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ দুদক পরিচালক কাজী মো. সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকে উপস্থিত হয়েছেন।

এর আগে ১৯ জানুয়ারি অভিযান চালিয়ে রাজধানীর ধানমন্ডিতে এস কে সুরের বাসা থেকে ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা জব্দের সময় তার নামে বাংলাদেশ ব্যাংকে ভল্ট থাকার তথ্য পায় দুদক। পরে সংস্থাটি জানতে পারে, সেটি ভল্ট নয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল্যবান সামগ্রী রাখার লকার (সেফ ডিপোজিট)। এরপর দুদক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া চিঠিতে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর ও হস্তান্তর না করতে বলা হয়।

গত ২১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা শাখা থেকে দুদককে ফিরতি চিঠি দিয়ে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর স্থগিত করার তথ্য জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারে বিধি অনুযায়ী ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত মূল্যবান সামগ্রী তাদের নিজ নামে প্যাকেট অথবা কৌটায় নিজ দায়িত্বে সিলগালাযুক্ত অবস্থায় জমার তারিখ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত রাখা হয়।

এরপর ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক আরেক চিঠিতে জানায়, এস কে সুর তিনটি লকার নম্বরে মূল্যবান সামগ্রী রেখেছেন। এর মধ্যে গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর এসডি-৪৪/৬১ এবং ২০১৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এসডি-৪৮/১২ নম্বরের নমিনি করেছেন স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরীকে। আর ২০১৭ সালের ১২ জুলাই এসডি-৪৭/৩৫ নম্বরে রাখা সামগ্রীর নমিনি করেছেন মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীকে।
সামগ্রীগুলোর ধরন সম্পর্কে চিঠিতে বলা হয়, সেগুলো কাপড়ে মোড়ানো কৌটা বা প্যাকেট। তবে ওই তিনটি লকারে কী রেখেছেন এস কে সুর, তা বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়নি।

সূত্র জানায়, লকারে রাখা প্যাকেট ও কৌটা সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা শাখা জানলেও, এর ভেতরে সামগ্রীর বিষয়ে জানে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ চিঠির পর দুদক সেটি খুলে দেখার জন্য অনুমতি চায়। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, লকার খুলতে আদালতের অনুমতি লাগবে। পরে ২২ জানুয়ারি দুদকের উপপরিচালক নাজমুল হুসাইন স্বাক্ষরিত আবেদন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজের কাছে জমা দেওয়া হয়। পরদিন লকার খোলার অনুমতি দেন আদালত।

শেয়ার করুন

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *