-বলা হয় যে, “দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত শিক্ষাকাল”। জন্মের পর থেকে মানবশিশুর শিক্ষা শুরু হয় আর চলতে থাকে আমৃত্যু পর্যন্ত। এই শিক্ষণের ও জীবনের বিভিন্ন ধাপে মানুষ বিভিন্ন আচরন করে থাকে। ছোট্ট শিশুর আচরণ আর পরিণত বয়সীর আচরণ এক হবে না তা বলাইবাহুল্য। তবুও ইদানিং খুব কষ্টের সাথে লক্ষ্য করছি যে আমরা আমাদের বাচ্চাদের সুন্দর-ভাবলেশহীন শৈশবটাকে নিজ হাতে জব্দ করে গলা টিপে মেরে ফেলছি। সেইটা কখনও গতানুগতিক শিক্ষাক্রমের যাঁতাকলের নীচে ফেলে আবার কখনও বা নিজের আচরণের উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে। যাহোক, অভিভাবক হিসেবে আমাদের আচরণের কয়েকটি অসঙ্গতি ও তা নিরসনকল্পে বিভিন্ন পরামর্শ আলোচনা করছি -
১। অপরিণত বয়সে অযাচিত স্কুলিং বন্ধ করুনঃ আমাদের অনেক অভিভাবকগণ তাদের শিশু বাচ্চার বয়স ৩-৪ বছর হতে না হতেই স্কুলে পাঠিয়ে দিয়ে নিজেকে বিশাল সচেতন অভিভাবক হিসেবে জাহির করেন। আর সদ্য বাড়ন্ত শিশুটাকে পাহাড়সম বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়। কারন আমাদের দেশে নার্সারি বা কেজি ক্লাসে যা পড়ানো হয় বা যে নিয়ম মানা হয় তা একেবারেই Garbage বা আবর্জনা বললে মোটেও অত্যুক্তি হবে না। দুই হরফ 'অ', 'আ' পড়ানোর নাম করে টাকা কামানো আর বাচ্চার বাবা- মায়ের উপরে হোম টাস্ক, টিউটোরিয়াল, ক্লাশ টেস্ট হেন তেন প্রেশার দেওয়ায় যেন মূখ্য। আর আমরাও গবেট, গোবেচারা সেজে সেইটাই অনুসরণ করি। বাচ্চাদের উপরে জুলুম চাপিয়ে দিই। যে বয়সটাতে বাচ্চাটার হেসে-খেলে বেড়ানোর কথা, বাড়ির মানুষজন ও আত্মীয় স্বজনের সংস্পর্শে থেকে তার ব্রেইনের নিউরন কানেক্টিভিটি বাড়ানোর কথা, সে বয়সে আমরা তার হাতে পুঁথি ধরিয়ে তার স্বাধীন মস্তিষ্ক বিকাশের সকল প্রক্রিয়া স্তব্ধ করে দিচ্ছি।-