
মিরপুরের শাহ আলী থানা এলাকায় প্রকাশ্যে মাদকের রমরমা বাণিজ্য: স্থানীয়দের অভিযোগ ও প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি
রাজধানীর মিরপুরে ডিএমপির শাহ আলী থানা এলাকায় প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্যের ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে চালানো হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পথচারীদের ডেকে ডেকে গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক বিক্রি হচ্ছে পুলিশের উপস্থিতিতেও। এই মাদক বাণিজ্যের ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মাদকের প্রধান এলাকা ও চক্রের তথ্য
শাহ আলী থানাধীন গুদারাঘাট, বিশিল, শাহ আলী মাজার, এবং মিরপুর-আশুলিয়া বেড়িবাঁধ এলাকাগুলো মাদক ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু। তদন্তে বের হয়েছে, এখানে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীরা পুরনো চক্র পুনর্গঠনের মাধ্যমে নতুন উদ্যমে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
গুদারাঘাটে মনির ওরফে পিচ্চি মনিরের নেতৃত্বে একটি বিশাল মাদক সিন্ডিকেট সক্রিয়। অন্যদিকে, নিউ সি ব্লকের মাদক সম্রাট রাসেল ওরফে কাউন্টার রাসেল এবং ডি ব্লকের বাবু ও রবিনসহ একাধিক সংঘবদ্ধ গ্যাং পুরো এলাকাকে মাদকের সর্গরাজ্যে পরিণত করেছে।
মাজারকেন্দ্রিক মাদক ব্যবসা ও সামাজিক প্রভাব
শাহ আলী মাজার এলাকাকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ দল নারী ও শিশুদের ব্যবহার করে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে। এলাকাবাসী জানান, প্রতিবাদ করলে তাদের শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
এছাড়া, এলাকাজুড়ে থাকা প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি মাদক নিরাময় কেন্দ্র মাদক ব্যবসার আড়াল হিসেবে কাজ করছে। এই কেন্দ্রগুলোর পরিচালনায় জড়িত অনেকেই মাদকাসক্ত বা মাদক ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।
স্থানীয়দের উদ্বেগ ও প্রশাসনের ভূমিকা
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, মাদক সহজলভ্য হওয়ার কারণে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা মাদকের প্রতি ঝুঁকছে। এর ফলে এলাকায় চুরি, ছিনতাই, নারী হয়রানি এবং হানাহানির মতো অপরাধ দিন দিন বাড়ছে।
স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতার কথা উল্লেখ করে তারা দ্রুত এবং কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশের প্রতিশ্রুতি
শাহ আলী থানার নবনিযুক্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ১৯ ডিসেম্বর থানায় যোগদান করেছেন এবং ধীরে ধীরে এলাকার বিষয়ে অবগত হচ্ছেন। তিনি বলেন, মাদক ব্যবসা একটি ঘৃণিত অপরাধ, এবং প্রমাণ পাওয়া গেলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এলাকাবাসীর আশা, প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে এই মাদক কারবার বন্ধ করে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।


Leave a Reply