১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার
২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খেজুরের রস ও গুড় সংগ্রহে আগ্রহ নেই যশোরের গাছিদের

শেয়ার করুন

যশোরের শার্শা উপজেলায় খেজুরের রস ও গুড়ের প্রচুর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও খেজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। একসময় এই অঞ্চলের খেজুর গুড় দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হতো, কিন্তু বর্তমানে সাধারণ গাছিদের মধ্যে আগ্রহের অভাবের কারণে খেজুর গাছ বিলুপ্তির পথে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আশির দশকে শার্শা উপজেলায় বাড়ি বাড়ি খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদন করা হতো। প্রতিটি বাড়িতে গুড় তৈরির জন্য খেজুরের রস জ্বালানোর হাড়ি ও বড় চুলা থাকত। তবে ইটভাটার জন্য খেজুর গাছের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বহু মানুষ খেজুর গাছ বিক্রি করতে শুরু করে এবং নতুন গাছ রোপণ না করায় খেজুর গাছের সংকট সৃষ্টি হয়। এর ফলে অনেক গাছি অন্য পেশায় চলে যান।

বর্তমানে শার্শা উপজেলার ভারত সীমান্ত সংলগ্ন রুদ্রপুর গ্রামে মাত্র ৮ জন গাছি আছেন, যেখানে একসময় ৩০০ গাছি ছিল। গাছিরা এখন অন্যের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করেন। তবে, খেজুর গাছের রস ও গুড়ের বর্তমান দাম বেড়েছে—এক ভাড় রসের দাম ২৫০-৩০০ টাকা, এবং এক কেজি নলেন গুড়ের পাটালি ৫০০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবুও তারা চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে সক্ষম হচ্ছেন না।

গাছি খলিলুর রহমান জানান, খেজুর গাছ তোলার খরচ ৭০ টাকা এবং প্রতিটি গাছ কাটতে ২০ টাকা পারিশ্রমিক দিতে হয়। অনেকের গাছ থাকলেও তারা নিজেরাই গাছ কাটতে আগ্রহী নন। তবে, গাছিরা আশাবাদী যে, যদি পূর্বের মতো সবাই আগ্রহী হয়, তবে এলাকার রস ও গুড়ের চাহিদা মিটিয়ে একে রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, উপজেলার ঐতিহ্য রক্ষায় বিভিন্ন সড়ক ও জমির আইলে খেজুর গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে এবং গাছিদের উৎসাহিত করতে বিভিন্ন সমাবেশের আয়োজন করা হচ্ছে, যাতে তারা রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদন করতে আগ্রহী হন।

 

শেয়ার করুন