ব্র্যাড পিটের নামে প্রতারণা, কোটি টাকা লুট

ফ্রান্সের এক নারীর সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে যোগাযোগ করেন হলিউড অভিনেতা ব্র্যাড পিট! সেই নারীর কাছে পিট দাবি করেন, তিনি অনেক অসুস্থ। হাসপাতাল থেকে ছবি তুলে পাঠানো হয়েছে, হয় বিস্তারিত কথাবার্তাও। জানানো হয়, অ্যাঞ্জেলিনা জোলির সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের মামলার কারণে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ রয়েছে; আর সে কারণেই নিজের চিকিৎসা খরচ চালাতে পারছেন না।

এমতাবস্থায় পিটের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ওই নারী। বিশ্বের নামকরা এই অভিনেতার নামে পাঠিয়ে দেন ৮ লক্ষ ইউরো অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ কোটি টাকা!

কেন সেই নারী ব্র্যাড পিটকে এত মোটা অঙ্কের অর্থ সহায়তা দিতে যাবেন, আবার বিশ্বের এই স্বনামধন্য নায়কের এতটাই খারাপ সময় আসলো কি, যে এক সাধারণ নারীর কাছ থেকে চিকিৎসার খরচ দাবি করবেন!

ঘটনার এখানেই শেষ নয়। সেই নারীর সঙ্গে নাকি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ব্র্যাড পিটের! ৫১ বছর বয়সী সেই ফরাসী নারীর নাম অ্যানি, তিনি নিজেই এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন এসব।

কিন্তু, যাকে তিনি ব্র্যাড পিট হিসেবে পরিচয় করিয়েছেন, তিনি আদতে অভিনেতা ব্র্যাড পিট নন। এমনকি হাসপাতাল থেকে যেসব ছবি ওই নারীকে তুলে পাঠানো হয়, সেগুলোর সবই ছিল নকল। যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল। বলা বাহুল্য, অ্যানি নামের সেই নারী রীতিমতো প্রতারণার শিকার হয়েছেন। যদিও তিনি প্রাথমিকভাবে বুঝতে পারেননি যে পুরো ইস্যুটির সঙ্গে ‘ব্রাড পিট’ এর বিষয়টিই মিথ্যে।

অ্যানি এও দাবি করেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ চলাচকালিন অ্যানির কাছে দামি উপহার চাইতেন নকল ব্র্যাড পিট। সঙ্গে ৯ হাজার ইউরো চান। সরল মনে সেই নকল ব্র্যাড পিটকে দিয়েও দেন সব। একপর্যায়ে অ্যানি বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন।

যেভাবে সেই প্রতারকের সঙ্গে পরিচয় অ্যানির

অ্যানির একজন কোটিপতির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কিন্তু তার বৈবাহিক জীবনে সমস্যা দেখা দেয়। কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তার মধ্যেই এই ব্র্যাড পিটের এই ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে প্রেমের কবিতা এবং প্রেমের বার্তা পেতে শুরু করেন অ্যানি। তিনি এক প্রকার ধরেই নেন, ব্র্যাড পিটের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন তিনি।

অ্যানির বিবাহবিচ্ছেদ চূড়ান্ত হলে ৭ লক্ষ ৭৫ হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণ পান। ব্র্যাড পিটের ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা আদায়ের ঘটনাটি শুরু হয় তখনই। এরপর সেই টাকা থেকেই নকল ব্র্যাড পিটকে চিকিৎসা সহায়তা দেন তিনি।

২০২৪ সালে, অ্যানি খবর পান, সত্যিকারের ব্র্যাড পিটের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন গয়না ডিজাইনার ইনেস ডি রেমন। অ্যানি সেই সম্পর্ক তখন  মেনে নিতে পারেননি। একপর্যায়ে হতাশায় অস্থির ও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এবং এরপর তিনি জানতে পারেন, তিনি হলিউড অভিনেতা ব্র্যাড পিটের সঙ্গে কখনোই সম্পর্কে ছিলেন না, বরং অনেক বড় প্রতারণার শিকার।

উল্লেখ্য, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।

শেয়ার করুন

Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *