ঘুরে আসতে পারেন পছন্দসই কাশবনে প্রিয় মানুষের সাথে

শরৎ মানেই আকাশে নরম তুলোর মতো শুভ্র মেঘের ভেসে বেড়ানো আর দিগন্তজোড়া প্রান্তরে কাশফুলের মনোরম দৃশ্য। প্রকৃতি প্রিয় মন খেয়াল খুশি মতো আকাশে ভেসে বেড়াতে না পারলেও ইচ্ছে হলেই কাশফুলের রাজ্যে হারিয়ে যেতে পারে। আর তাই নগরীর বুকে ব্যস্ততার অবসরে কাশফুলের বিস্তৃর্ণ প্রান্তরের সৌন্দর্য উপভোগকারীর সংখ্যা কম নয়। সাধারণত নদী তীর এবং পানির কাছাকাছি ফাকা বালুময় জমিতে প্রচুর কাশফুল ফুটে। শরতকাল অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসে সাধারণত কাশফুল ফুটে। তাই কাশবন বেড়ানোর জন্যে উপযুক্ত সময় তখনই। তবে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে কাশফুলের দেখা বেশি পাওয়া যায়। কাশফুলের শুভ্রতায় মনকে শান্ত করতে ভ্রমণ গাইডের আজকের আয়োজনে থাকছে ঢাকার আশেপাশে কিছু কাশবনের খোঁজখবর।

কাশফুল দেখতে যাওয়ার পরামর্শ: কাশবনের অবস্থান সাধারণত জনবিচ্ছিন্ন জায়গায় হয়ে থাকে। তাই নিরাপত্তার জন্য নিজ এলাকার আশেপাশে কাশবনের সন্ধান করুন অথবা দলবদ্ধভাবে ভ্রমণ করুন

৩০০ ফিট সড়ক: প্রকৃতিপ্রেমী এবং ভোজন রসিকদের কাছে প্রসিদ্ধ ৩০০ ফুট সড়ক কাশফুল আর রেস্তোরাঁর জন্য সর্বাধিক পরিচিত ছিল। তবে বিভিন্ন কারণে রেস্তোরাঁগুলো ৩০০ ফিট থেকে সরিয়ে নেয়া হলেও কাশবন, নদী এবং বিস্তৃত খোলা প্রান্তরের সৌন্দর্য আগের মতোই অটুট রয়েছে। কালো কুচকুচে পিচঢালা রাস্তার দুইপাশে শুভ্রতার সমারোহ মনকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় কল্পনার রাজ্যে।

দিয়াবাড়ি: গত কয়েক বছরে দিয়াবাড়ির জনপ্রিয়তা তুমুলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কাশবনের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি ফটোসেশনে জন্য দিয়াবাড়ি একটি আদর্শ জায়গা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে এখানে বিনোদনপ্রেমীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। আর কাশবনের পাশে নদীর তীরের হিমেল বাতাস আলোড়িত করে দর্শনার্থীদের।

আফতাবনগর: রামপুরা ব্রিজ থেকে উত্তর পূর্ব দিকে অবস্থিত জহুরুল ইসলাম সিটির ভেতর দিয়ে কিছুটা সামনে এগিয়ে গেলে কাশবনের আরেক মহাসমুদ্র চোখে পড়ে। ঢাকার এত কাছে আফতাবনগরের এই কাশবন জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে সৌন্দর্য প্রেমীদের কাছে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

হযরতপুর: কেরাণীগঞ্জের হযরতপুরের কালিগঙ্গা নদীর তীরের বিস্তৃর্ণ ভূমিতে শরতের শোভা কাশফুল ফোটে। বছিলা সেতু অতিক্রম করে আটিবাজার পার হয়ে আরো কিছু দূরেই হযরতপুর। খেয়া নৌকায় নদী পার হলে দেখা মিলবে কাশবনের।

ধলেশ্বরী নদী: ধলেশ্বরী নদীর দুই তীরে প্রতিবছরই কাশফুল ফুটে থাকে। ঢাকা থেকে মাওয়া সড়ক যাওয়ার কুচিয়ামারা এলাকাযর নদীতেও কাশফুল দেখা যায়।

মায়াদ্বীপ: মেঘনার বুকে কাশফুলের মায়া ছড়িয়ে আছে মায়াদ্বীপ। এই দ্বীপে কাশফুলের সৌন্দর্য দেখার সাথে সাথে বোনাস হিসাবে এখানকার মানুষের জীবনযাত্রার সাথে পরিচিত হতে পারবেন। ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে চড়ে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা হয়ে বৈদ্দের বাজার এসে সেখান থেকে মেঘনার ঘাট হয়ে ইঞ্জিন নৌকা ভাড়া করে মায়াদ্বীপ যাওয়া যায়।

পদ্মা নদী: শরতে পদ্মা নদীর আশেপাশে অনেক স্থানেই কাশফুল ফোটে। শুভ্র এই ফুলের সৌন্দর্য আহরণে চলে যেতে পারেন মাওয়ার শিমুলিয়া ঘাটে। সেখান থেকে নৌকা ভাড়া করে নদীতে ঘুরোঘুরির সাথে সাথে খোঁজে নিন কাশবনের চর।

যমুনার চর: মানিকগঞ্জের আরিচার পুরনো ফেরিঘাট হতে ইঞ্জিন নৌকা নিয়ে চলে যেতে পারেন যমুনার বুকে জেগে ওঠা চরের কাশবনে। গাবতলী থেকে অল্প টাকা ভাড়ায় শুভযাত্রা, লাক্সারি পরিবহনের বাসে সরাসরি আরিচা যাওয়া যায়।

মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ: নদীর তীরবর্তী বালুময় প্রান্তরে শরতে কাশফুলের মেলা বসে। আর বুড়িগঙ্গা তীরের মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ কাশফুলের তেমনি এক রাজ্য। এছাড়াও বসিলা সড়ক ধরে এগিয়ে ওয়াশপুরের বিভিন্ন ফাকা জমিতে কাশফুলের সমারোহ দেখা যায়।

শেয়ার করুন

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *