১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাহাবি জীবন ইবাদতে মনোনিবেশের কারণে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছিলেন যে সাহাবি

শেয়ার করুন

হজরত আবু দারদা (রা.): জ্ঞান, ত্যাগ ও অনুশোচনার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী, অশ্বারোহী ও ন্যায়পরায়ণ বিচারক ছিলেন হজরত আবু দারদা (রা.)। তার ডাক নাম ছিল আবু দারদা, যা তার কন্যা দারদা-এর নাম অনুসারে পরিচিতি লাভ করে। তার মূল নাম ছিল আমির, যদিও লোকেরা তাকে উয়াইমির বলেও ডাকত।

জীবনের পরিবর্তন: ব্যবসায়ী থেকে ইবাদতে আত্মনিয়োগ

তিনি ছিলেন মদিনার বিখ্যাত খাযরাজ গোত্রের বালহারিস শাখার সন্তান এবং রাসূল (সা.)-এর সমবয়সী বা কিছুদিনের ছোট ছিলেন। ইসলাম গ্রহণের আগে তিনি মদিনার একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু ইসলাম গ্রহণের পর একান্তভাবে ইবাদতে আত্মনিয়োগ করেন।

তিনি নিজেই বলেছেন—

“রাসূল (সা.)-এর নবুয়ত প্রাপ্তির আগে আমি ব্যবসায়ী ছিলাম। এরপর যখন ইসলাম গ্রহণ করলাম, তখন ব্যবসা ও ইবাদতের মধ্যে সমন্বয় সাধনের চেষ্টা করলাম। কিন্তু তা সম্ভব হলো না। তাই ব্যবসা ছেড়ে ইবাদতে আত্মনিয়োগ করলাম।” (তারীখুল ইসলাম, ২/১০৭)

ব্যবসার প্রতি এতটাই বিতৃষ্ণ হয়ে ওঠেন যে বলতেন—

“যদি মসজিদে নববীর সামনে আমার একটি দোকান থাকে, যেখানে প্রতিদিন ৪০ দীনার লাভ হয় এবং আমি তা সদকা করি, তবুও এমন ব্যবসা আমার পছন্দ নয়।”

যখন লোকেরা এর কারণ জানতে চাইত, তিনি বলতেন—

“কঠিন হিসাবের ভয়।”

ইসলাম গ্রহণ ও অনুশোচনা

রাসূল (সা.)-এর মদিনায় হিজরতের প্রায় এক বছর পর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। কেউ কেউ মনে করেন, তিনি বদর যুদ্ধের পর ইসলাম গ্রহণ করেন। তবে এই দেরিতে ইসলাম গ্রহণ করার বিষয়টি নিয়ে তিনি সারা জীবন অনুশোচনা করেছেন।

তিনি প্রায়ই বলতেন—

“এক মুহূর্তের প্রবৃত্তির দাসত্ব দীর্ঘকালের অনুশোচনার জন্ম দেয়।”

তার জীবন ছিল সত্যের সন্ধানে আত্মনিবেদিত, যেখানে দুনিয়ার লোভ থেকে নিজেকে দূরে রেখে আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াই ছিল তার মূল লক্ষ্য।

 

শেয়ার করুন