পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নেমেছে ১৭ ডিগ্রিতে

-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে বইতে শুরু করেছে হিমেল হওয়া। এখানে ধীরে ধীরে বাড়ছে শীতের পরশ। নিম্নমাত্রার তাপমাত্রা রেকর্ড বলে দিচ্ছে ঘনিয়ে আসছে শীত।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ভোর ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যাবেক্ষণাগার কার্যালয়। এর আগে সোমবার দেশের সর্বনিম্ন ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছিল।

সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভোরের সূর্য উঠলেও হালকা কুয়াশা ঝরা প্রকৃতি। সবুজ ঘাসের ডগায় টলমল করছে ভোরের শুভ্র শিশির। বৃষ্টির ফোটার মতো ঝরছে শিশির কণা। শিশির মাড়িয়ে কাজে যেতে দেখা যায় চাষিদের। শীত ঘিরে বাংলার ঘরে ঘরে প্রস্তুতি নিচ্ছে নবান্নের আয়োজন।

স্থানীয়রা জানান, ধীরে ধীরে বাড়ছে শীতের মাত্রা। সন্ধ্যার পর থেকেই উত্তরীয় হিমেল হাওয়ায় শীতের পরশ অনুভূত হচ্ছে। মাঝরাতের পর ভোর পর্যন্ত গায়ে কাঁথা নিতে হচ্ছে। উত্তরের এ জেলাটি বরফের পাহাড় হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার বিধৌত এলাকা হওয়ায় অন্যান্য জেলার আগেই এ অঞ্চলে শীতের আগমন ঘটে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত শীতের দাপট বেশি হয়ে থাকে। তবে অক্টোবর থেকেই শুরু হয় শীতের আমেজ। শীতকে কেন্দ্র করে নবান্নের গুঞ্জনও শুরু হয়েছে ঘরে ঘরে।

ভ্যানচালক রাজ্জাক, বিল্লাল ও দিনমজুর হোসেন আলী বলেন, গতকাল সোমবার রাতে ঠান্ডা অনুভব করেছি। বাজার আসার সময় বেশ ঠান্ডা লাগছিল। ঠান্ডা বাড়তে শুরু করেছে। তবে দিনে গরম। সন্ধ্যার পর থেকেই ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। মনে হচ্ছে এখন শীতের গরম কাপড়-চোপড় বের করতে হবে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, আশ্বিন মাসে মৌসুমি বায়ু কম সক্রিয় থাকায় এবং উত্তরীয় বায়ুর কিছুটা প্রভাব থাকায় শেষ রাতে শীত নেমে এলে ঠান্ডা অনুভূত হয়। বিশেষ করে মৌসুমি বায়ু যখন বাংলাদেশের ওপর আর সক্রিয় থাকবে না। অক্টোবর থেকে উত্তরাঞ্চলে কুয়াশা পড়া শুরু হয়। এখন থেকেই উত্তরের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা কমতে থাকবে। নভেম্বরের শুরু হয়ে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে পুরোপুরি শীতের প্রভাব পড়বে।

শীতকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ-তোষক কারিগরদের। শীতের প্রস্তুতি হিসেবে শীত আসার দুয়েক মাসের আগে থেকেই কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় কারিগরদের। এছাড়া ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানে শীতের কাপড় আনতে শুরু করেছেন। শীতের আগেই শীতের কাপড় এবং লেপ-তোষক তৈরি করে আগাম প্রস্তুতি নিতে যায় অনেককে।

এদিকে এখনও সেভাবে শীত না পড়ায় দিনে গরম ও রাতে হালকা শীতের কারণে আবহাওয়ার কারণে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

পঞ্চগড়ের প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, আগের তুলনায় তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন দিন যত যাবে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে।-

শেয়ার করুন

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *