হতাশার ১ ড্র-য়ে বছর শেষ ব্রাজিলের

-ব্রাজিলের ফুটবলে সময়টা ভালো যাচ্ছে না বেশ অনেকটা দিন ধরেই। পুরো দলে একপ্রকার পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। কিন্তু এই হাওয়াবদল খুব একটা কাজে দিচ্ছে না। কোচ দরিভাল জুনিয়রের উড়ন্ত শুরুটাও অনেকটা মাটিতে নেমেছে সময়ে সময়ে। চলতি বছর মহাদেশীয় আসরে শেষ চারেও যেতে পারেনি ব্রাজিল।হারতে হয়েছিল উরুগুয়ের কাছে। বছরের শেষ ম্যাচেও সেই একই প্রতিপক্ষের কাছে হতাশাজনক এক ড্র করেছে সেলেসাওরা।

অবশ্য পিছিয়ে থেকে ম্যাচে ফিরে আসাটাও ব্রাজিলের জন্য এই ম্যাচে কম প্রাপ্তির নয়। প্রথমার্ধে আক্রমণভাগে ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সের পর দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিটের মাথায় গোল হজম করতে হয় তাদের। সেখান থেকেই অবশ্য ফিরে এসেছে তারা। দর্শনীয় দুই গোল অবশ্য চোখের সামনে দেখেছেন ভক্তরা। গোল পরিশোধের পর ব্রাজিলের চিরায়ত আক্রমণাত্মক ফুটবলও দেখা গেছে। কিন্তু ফরোয়ার্ড লাইনের দুর্বলতায় আরও একবার হতাশ হতে হয়েছে তাদের।

পুরো ৪৫ মিনিটে গোটা সাতেক শট। কিন্তু প্রতিপক্ষের গোলমুখে আছে কেবল এক শটই। সুযোগ এসেছিল বারবার। কিন্তু ব্রাজিলের ফরোয়ার্ডরা একের পর এক সুযোগই মিস করে গেলেন পুরোটা সময় জুড়ে। প্রতিপক্ষ উরুগুয়ের ডি-বক্সে একের পর এক বল রেখেছিলেন মিডফিল্ডাররা। সেটাকে কাজে লাগাতে পারেননি কেউই। রাফিনিয়া, ইগর হেসুস, ভিনিসিয়ুসরা মিস করেছেন একের পর এক সুযোগ।

ব্রাজিলের শুরুটা নেহাত মন্দ না। ৬ মিনিটেই রাফিনিয়ার পাস থেকে গোল করার উপলক্ষ্য পেয়েছিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। কিন্তু সেখান থেকে ফল পাশে আসেনি তাদের। একাধিকবার সুযোগ পেয়েও সাদামাটা আক্রমণের খেসারত ব্রাজিল দিয়েছে পুরো সময়জুড়ে। ৩০ মিনিয়ে ফেদে ভালভার্দের ফ্রিকিক বারের বাইরে দিয়ে গেলে রক্ষা পায় ব্রাজিল। ঘরের মাঠে ব্রাজিলের সেরা দুই সুযোগ পেয়েছিলেন রাফিনিয়া। ৩৫ মিনিটে তার শট পোস্টে থাকেনি। আর যোগ করা সময়ে উরুগুয়ে গোলরক্ষক রোশেটের দুর্দান্ত সেইভ গোলবঞ্চিত করে তাদের।

অনেকটা উত্তেজনাহীন প্রথমার্ধের পর আসে দুর্দান্ত এক দ্বিতীয়ার্ধ। যেখানে ব্রাজিল ছিল আরও বেশি ক্ষুরধার। উরুগুয়েও অনেকটাই খোলস ছেড়ে লড়তে চেয়েছিল সমানে সমানে। শুরুর গোলটাও পায় তারাই।

ড্র করে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের কনমেবল অঞ্চলে পাঁচে নেমে গেল ব্রাজিল
২০২৪ সালে ৬ জয়ের বিপরীতে ৭ ড্র (একটিতে টাইব্রেকে হার) এবং ১ হার ব্রাজিলের
২০ পয়েন্ট নিয়ে কনমেবল অঞ্চলে বাছাইপর্বে এখন দ্বিতীয় উরুগুয়ে
ডি-বক্সের বাইরে খুব একটা ভীতি ছড়ানো আক্রমণ ছিল না সেটি। ফেডে ভালভার্দে যখন বল পায়ে পেয়েছেন, তখনো ঠিক ভয় ধরানো অবস্থানে ছিল না উরুগুয়ে। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের এই মিডফিল্ডার দেখালেন তার পায়ের কারুকাজ। ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো এক শট। তাতে পরাস্ত পুরো ব্রাজিলের রক্ষণভাগ। দুই ডিফেন্ডার আর গোলরক্ষককে পরাস্ত করে ভালভার্দের শট আশ্রয় নেয় জালে।

গোল শোধ করতে ব্রাজিল সময় নিয়েছে মোটে ৭ মিনিট। ব্রাজিলের মিডফিল্ডে কোচ দরিভালের বিশেষ আস্থার নাম গেরসন। তারই পা থেকে আসে গোল। রাফিনিয়ার ক্রসটা ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেনি উরুগুয়ের রক্ষণ। বল চলে যায় ডি-বক্সের বাইরে অনেকটা ফাঁকায় থাকা গেরসনের সামনে। দুর্দান্ত এক ভলি কাছের পোস্টে। সেখান থেকেই ব্রাজিলের সমতায় ফেরা।

৬৪তম মিনিটে এগিয়েও যেতে পারত ব্রাজিল। বদলি নামা গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির বুলেট গতির শট ভালোভাবেই গ্রিপ করেন উরুগুয়ে গোলরক্ষক সের্হিও রোশেত। চার মিনিট পর সফরকারীদের এগিয়ে নেওয়ার দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন রদ্রিগো আগিরে। কিন্তু বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়েও ঠিক মতো শট নিতে পারেননি তিনি।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে সুযোগ হাতছাড়া করেন দানিলো। শট রাখতে পারেননি ব্রাজিল অধিনায়ক। ম্যাচের ফল তাই ১-১ ড্রতেই মেনে নিতে বাধ্য হয় দুই দল।

নভেম্বর উইন্ডে ব্রাজিল টানা দুই ড্রয়ে পিছিয়ে নেমে গেছে পাঁচে। ১২ ম‍্যাচে পাঁচ জয় আর তিন ড্রয়ে পাঁচবারের বিশ্ব চ‍্যাম্পিয়নদের পয়েন্ট ১৮। পাঁচ জয়ের সঙ্গে পাঁচ ড্রয়ে ২০ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে উরুগুয়ে। আর্জেন্টিনা যথারীতি থাকছে সবার ওপরে। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সংগ্রহ ১২ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট। –

শেয়ার করুন

Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *