১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

“সমতার নামে নারীর বিকৃতি চলবে না”— প্ল্যাকার্ডে রাবি ছাত্রীসংস্থার প্রতিবাদ

শেয়ার করুন

রাবি প্রতিনিধি:
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন-২০২৫ এর সুপারিশগুলোকে ইসলামবিরোধী, সাংস্কৃতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং নারীর মর্যাদার পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা, রাবি শাখা।

২১ মে (বুধবার) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে সংগঠনের ব্যানারে প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেন সংস্থার নেত্রী ও সদস্যরা। এসময় “সমতার নামে নারীর বিকৃতি চলবে না”— এমন নানা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে প্যারিস রোড এলাকা।

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্রীদের হাতে দেখা যায়: “নারী-পুরুষ বাইনারি এই শর্তেই দেশ গড়ি”, “যৌন কর্মী স্বীকৃতি দান, মায়ের জাতির অপমান”, “সম অধিকার নয়; চাই ন্যায্য অধিকার”, “নারী-পুরুষ একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, সহযোগী”, “পতিতাবৃত্তিকে না বলি”, “নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল চাই, অপসংস্কৃতি চলবে না”, ও ‘Say No to LGBTQ Agenda’ প্রভৃতি স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড।

সংগঠনের নেত্রীরা জানান, “গত ১৯ এপ্রিল ১০ সদস্যবিশিষ্ট সংস্কার কমিশনের একটি টিম প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে ৩১৮ পৃষ্ঠার যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, তাতে ৪২৩টি সুপারিশ রয়েছে। যার অধিকাংশ সুপারিশ ইসলাম ধর্ম, জাতিসত্তা ও নারীর নিজস্ব মর্যাদার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নারী স্বাধীনতার নামে এসব প্রস্তাব পারিবারিক কলহ বাড়াবে এবং সমাজে অনৈক্য তৈরি করবে।”

তাঁরা আরও বলেন, “সুপারিশগুলোতে নারী-পুরুষের স্বভাবগত পার্থক্যকে অস্বীকার করে সমতার নামে একতরফা চিন্তা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে নারী-পুরুষের কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। একজন নারীর কিছু গুণাবলি পুরুষের নেই, আবার পুরুষের কিছু বৈশিষ্ট্য নারীর মাঝে নেই। এ বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে যে যুক্তি দাঁড় করানো হয়েছে, তা প্রকৃত নারীমুক্তির অন্তরায়।”

ছাত্রীসংস্থার নেত্রীদের অভিযোগ, “সংস্কার কমিশনের সমালোচনা যখন শুরু হয়, তখন তা আড়াল করতে ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা’ নামে নতুন নাটক শুরু হয়। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, অশালীন পোশাক এবং ধর্মীয় শিষ্টাচারকে উগ্রবাদ বলে আখ্যায়িত করার মাধ্যমে নারীর ভূষণ খর্ব করা হয়েছে। ট্রান্স মুক্তিকে নারীমুক্তি হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে, যা অধিকাংশ নারীর স্বার্থের বিরোধী এবং একটি বিধ্বংসী মতবাদকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা।”

তাঁরা বলেন, “ট্রান্সজেন্ডার ধারণা বিকৃত মস্তিষ্কের ফসল। মানবকল্যাণে এর বৈধতা নেই বরং একে চিকিৎসার বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।”

এসময় ধর্ম, সংস্কৃতি ও জনমতকে অবজ্ঞা করে গঠিত এই নারী সংস্কার কমিশন বাতিল এবং পাশাপাশি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের মতাদর্শ ও ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক বাস্তবতায় বিশ্বাসী প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি নতুন কমিশন পুনর্গঠন করার দাবি জানান তারা।”

শেয়ার করুন